মুখে রক্ত, ঠোঁটে কামড়ের দাগ, ক্ষতবিক্ষত যৌনাঙ্গ, এ কেমন স্বাধীন বাংলাদেশ!
মুখে রক্ত, ঠোঁটে কামড়ের দাগ, ক্ষতবিক্ষত যৌনাঙ্গ, এ কেমন স্বাধীন বাংলাদেশ! |
আজ দুপুরে মোবাইল হাতে নিয়ে ফেসবুকে ঢুকতেই চোখে পড়লো ফুলের পাপড়ির মতো নিষ্পাপ একটি শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার নিউজ। নিউজটি ভালোভাবে পড়লাম। আহা! কী বিভৎসতা, কী নির্মমতা! ৭ বছরের একটি ছোট্ট শিশু, ছোট্ট শরীর। নাম সামিয়া আফরিন সায়মা। রাজধানীর ওয়ারী সিলভারডেল স্কুলের নার্সারিতে পড়তো সে। যে শিশুটি হাসি-উল্লাস, খেলাধুলা আর আব্বু-আম্মুকে ডেকে মাতিয়ে রাখতো ঘর। নিষ্পাপ সেই শিশুটির নিথর দেহ পড়ে আছে ৯ তলার একটি নির্জন খালি ফ্লাটের কোনায়। মুখে রক্ত, ঠোঁটে কামড়ের দাগ, ক্ষতবিক্ষত যৌনাঙ্গ। কোনো এক নরপিশাচের শিকার হয়েছে সে।
বিকৃত ও বিকারগ্রস্ত যৌন উন্মাদনায় হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে শিশুটির ওপর। কুড়ে ছিড়ে খেয়ে গেলো অসভ্য জানোয়ার। এর আগে শুক্রবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। নিউজটি পড়তে ততক্ষণে আমার চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। নিজেকে ধিক্কার দিলাম। নিজেকে পুরুষ হিসেবে ভাবতে ভীষণ লজ্জা অনুভব করছিলাম। ভাবছিলাম যে পুরুষটি একটি শিশুর ওপর এভাবে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে শেষ করে দিল, সে কি জঙ্গলের রয়েল বেঙ্গল টাইগার! হায়েনা! শিয়াল কিংবা কুকুর! নাকি তার চেয়ে ভয়ঙ্কর কোনো পশু! শুক্রবার আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নবনির্মিত ভবনটির নবম তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে সায়মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সায়মা হত্যার ঘটনায় তার বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ভবন মালিকসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে সায়মার ধর্ষণকারী এবং খুনিকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক, টেলিভিশনে তা লাইভ দেখানো হোক। গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খুনের বিচার ভাইরাল হবে, এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হোক যেন প্রতিটি ধর্ষণকারীর হৃৎকম্পন শুরু হয়। তারা যেন ধর্ষণ করার আগে নিজের প্রাণের কথা একবার ভাবে। এ ছাড়া কোনোভাবেই বন্ধ হবে না ধর্ষণ, বন্ধ হবে না খুন।
মানুষকে আল্লাহ তায়ালা আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু মানুষ সেই সম্মানের জায়গা থেকে সরে গিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রাণীতে পরিণত হয়ে গেছো! শয়তানও বিস্মিত মানুষের বিভৎস্য আচরণে! হায়! মানুষ এত নিকৃষ্ট কিভাবে হয়! আল্লাহ তায়ালা এই অসভ্য-বর্বর মানুষের কথা কোরান শরিফে তুলে ধরে বলেন, 'এরা শুধু চতুষ্পদ জন্তুই নয় বরং তার চেয়েও বেশি নিকৃষ্ট (সুরা আল-ফুরকান, আয়াত ৪৪)।
নিহত সামিয়া আফরিন সায়মার স্বজনদের আহাজারি। ইনসেটে সামিয়া। ছবি-সংগৃহীত
নিহত সামিয়া আফরিন সায়মার স্বজনদের আহাজারি। ইনসেটে সামিয়া। ছবি-সংগৃহীত
দিনই বাড়ছে এই অসভ্য, লম্পট ও বর্বর মানুষের সংখ্যা। খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়ে ধর্ষণ আর খুনের নিউজ।! পত্রিকায় খবর-সারা দেশে গত ২২ দিনে ২৮ জন মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভয়াবহ হারে বাড়ছে ধর্ষণের সংখ্যা। ভেবেছিলাম, বরগুনায় রিফাতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার দায়ে খুনি নয়ন বন্ডকে যখন ক্রসফায়ার দিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে, এই ছবি যখন গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, সব মানুষ এটা দেখেছে। বাকি আসামিরা একের পর ধরা পড়ছে, ভেবেছিলাম-এসব দেখে অপরাধীরা নিবৃত্ত হবে, ধর্ষণ-খুনের মাত্রা কিছুদিনের জন্য হলেও বন্ধ থাকবে। কিন্তু না, একটুও কমেনি। বরং আরো বিভৎস্য অবস্থায় আরো নির্মমভাবে মানুষ মানুষকে হত্যা করছে, চলছে একের পর এক ধর্ষণ। বাদ পড়ছে না ১০০ বছরের বৃদ্ধাও। এই নরপিশাচ কারা? সমাজের অশিক্ষিত লোক, বস্তির লোক? রিকশা ওয়ালা কিংবা কোনো গুন্ডাবাহিনী? না এরা গরিব মানুষ নয়, বা শুধু গুন্ডা বাহিনী নয়, ধর্ষণের নিউজগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় শিক্ষক, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, ডাক্তার, ইমাম থেকে শুরু করে উপ সচিব পর্যন্ত বহু সম্মানিত মানুষ ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। একটিই কারণ দৃষ্টান্তমূলক সাজা হচ্ছে না।
এরা ধরা পড়লেও আইনের নানা ফাঁক-ফোকরে বেরিয়ে আসছে। সেদিন খবরের কাগজে পড়লাম ধর্ষণ মামলার আসামি জামিনে বের হয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছে। তারপরও যদি প্রশাসন বা সরকার নির্লিপ্ত থাকে, শৈথিল্য দেখায় তাহলে ধর্ষণের হাত থেকে এ দেশের কোনো মা-বোনই নিরাপদে থাকবে না। মনে রাখতে হবে নিষ্পাপ শিশু সায়েমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে না পারলে ৩০ লাখ শহিদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা অর্থহীন। যে স্বাধীনতা দেশেরে মানুষের নিরাপত
No comments