মেহেদি লাগাতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশু
মেহেদি লাগাতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশু |
ঈদের আগের দিন গত রোববার হাতে মেহেদি লাগাতে গিয়ে ১২ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতাল ও পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন রাতে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। বাড়ির পাশের এক নারীর কাছে হাতে মেহেদি লাগানোর জন্য যায় সে। ওই সময় ওই নারীর ভাড়াটে আল আমিন (২৫) ও তাঁর সহযোগী মঞ্জু (৩০) শিশুটিকে হাত-পা বেঁধে ও মুখে কাপড় গুঁজে ধর্ষণ করেন। শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওই অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান। শিশুটির গোঙানির শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পরিবারকে খবর দেয়। এরপর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভোলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, প্রচুর রক্তক্ষরণে শিশুর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে গতকাল সোমবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানান, শিশুটির কৃষক বাবা ঈদ উপলক্ষে তাঁর দুই মেয়ের জন্য বাজার থেকে মেহেদি কিনে আনেন। রোববার সন্ধ্যার দিকে তিনি গরু বিক্রির টাকা আনতে ভোলা শহরে যান। বাবা শহরে চলে যাওয়ার পর দুই বোন রাত আটটার দিকে প্রতিবেশী দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে হাতে মেহেদি লাগানোর জন্য যায়। এ সময় ওই প্রতিবেশীর ভাড়াটে আইনজীবীর সহকারী আল আমিন শিশুটিকে 'কথা আছে' বলে নিজের ঘরে ডেকে নেন। আল আমিনের স্ত্রী ঘরে ছিলেন না। এই সুযোগে শিশুটিকে আল আমিন ও তাঁর সহযোগী মঞ্জুর আলম ধর্ষণ করেন।
ভোলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, প্রচুর রক্তক্ষরণে শিশুটির অবস্থা গুরুতর। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
ভোলার সিভিল সার্জন রথীন্দ্র নাথ মজুমদার আজ মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, প্রয়োজনীয় রক্ত দিয়ে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আজ দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটি হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তার আরও রক্তের প্রয়োজন। অভিভাবকদের রক্ত জোগাড় করতে বলা হয়েছে।
শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খবির মিঞা বলেন, শিশুটির বাবা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার বলেন, ঘটনার দিন রাতে মূল দুই আসামির সহযোগী জামাল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া দুইজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
No comments