যশোরে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে ডেঙ্গু
যশোরে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে ডেঙ্গু |
যশোর জেলার ৮টি উপজেলা ও শহরে ডেঙ্গু জ্বর ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা নির্দেশনা দিলেও বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। গ্রামে পাড়ায় মহল্লায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়লেও এডিস মশা নিধনে উদ্যোগ নেয়নি ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, আলোচনা সভা, লিফলেট বিতরণ ও ফটোসেশন ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে জোরালো কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না যশোরের সব স্থানে। যশোর পৌরসভা ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে প্রথমে কিছু কার্যক্রম চালালেও বর্তমানে প্রায় থেমে গেছে।
যশোর সিভিল সার্জন জানান, ঢাকার বাইরে যশোরে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু কেনো ডেঙ্গু রোগী বেড়েই চলেছে তার নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছেনা স্বাস্থ্য বিভাগ। কারণ উদঘাটনে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে৷
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল রাত ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত যশোরে আরো ৫২ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। জেলায় মোট ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩শ ১৭ জন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন ১ হাজার ৪৩ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৩৭ জন। এর মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০৬ জন, বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১৭ ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩১ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত দুই নারীর। যশোরে আশংকাজনক হারে ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে। বিভাগীয় কমিশনার যশোর জেলাকে তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় স্থানীয় ভাবে বিশেষ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশনা দেন।
এডিস মশার লার্ভা নিধনের ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়ে বলা হয় জেলা উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ডে সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা, জন প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে পরিছন্নতা ও সচেতনতা বিষয়ে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেন। এছাড়া ছুটির দিনও সরকারি কর্মকর্তাদের কাজ করার নির্দেশনা জারি করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই নির্দেশনার গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক কার্যক্রম এখনো পৌঁছায়নি। বিভিন্ন নির্দেশনা জারি হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। যশোর শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর এলাকায় আলোচনাসভা, লিফলেট বিতরণ ও ফটোসেশন ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে তেমন কোন কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি। যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, ছাতিয়ানতলা, দৌলতদিহি, কাশিমপুর, হৈবতপুর, নাটুয়াপাড়া, ডহেরপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে কোন কার্যক্রম তাদের এলাকায় হয়নি। এই বিষয়ে মানুষকে সচেতনতার জন্য কেউ তাদের কোন পরামর্শ দিতেও আসেনি। তাদের ভাষায় সেখানে কোন ডেঙ্গু প্রচারণা বা প্রতিরোধে কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
যশোর সদরের দুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ডেঙ্গু মশা নিধনে কার্যক্রমের নির্দেশনা জারি করা হলেও কোন অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। যে কারণে তারা জোরালো কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন। তবে ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা মানুষকে ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার রায় জানান, শুধুমাত্র যশোর শহরে ১৫ হাজার এডিস মশার লার্ভার সন্ধান পাওয়া গেছে। বিভিন্ন উপজেলায় লার্ভার সংখ্যা আরো বাড়বে। পৌর কর্তৃপক্ষ এডিস মশার লার্ভার স্থানে ফগার মেশিন দিয়ে বিদেশী ওষুধ স্প্রে করছে। এখন স্প্রে করা হলেও তাৎক্ষনিকভাবে লার্ভার ধ্বংস হবে না। তবে এর ফল মিলবে আগামী বছর। গ্রামাঞ্চলে কোন জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এডিস মশার লার্ভা নিধনে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে জানতে পেরেছেন। যে কারণে সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে। যশোরে ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় তারাও দুশ্চিন্তায় রয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে তারাও প্রচার-প্রচারণা, আলোচনা সভাসহ নানা কার্যক্রম করা হচ্ছে। যশোর পৌর এলাকা শেষ করে বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রচার প্রচারণায় যাওয়া হবে।
সিভিল সার্জন বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৩টি মনিটরিং টিম গঠন, ১টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। টিমের সদস্যরা আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, মানুষের সচেতনতা বাড়াতে না পারলে ডেঙ্গু �
No comments