কেরানির স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ২৬৩ কোটি টাকা! - Jashore24.com

শিরোনাম

কেরানির স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ২৬৩ কোটি টাকা!

কেরানির স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ২৬৩ কোটি টাকা!
কেরানির স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ২৬৩ কোটি টাকা! 

বহুল আলোচিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেই আবজাল এখন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। একা নন। গেছেন সপরিবারে। আছেন বহাল তবিয়তে রাজার হালে। সেখানেও তার বাড়ি-গাড়িসহ কোনো কিছুরই অভাব নেই। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কড়া নজরদারির মধ্যে কীভাবে এত বড় রাঘববোয়াল দেশ ছাড়তে পারল সেটিই এখন ভাবিয়ে তুলছে সংশ্লিষ্টদের। 

এ জন্য কেউ শর্ষের মধ্যে ভূত তালাশের কথাও ভাবতে চান। কেননা রীতিমতো দুদকের শক্ত জাল কেটে বেরিয়ে গেছেন আবজাল। 

এদিকে কথায় আছে 'চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে'। আবজালের ক্ষেত্রেও এখন সেরকম কিছু ঘটতে যাচ্ছে। দুদকের দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষ। বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য গোপন করার প্রমাণও মিলেছে। 

দালিলিক হিসেবে যার পরিমাণ প্রায় ৩শ' কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানমের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ২৬৩ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য মিলেছে। হতবাক হওয়ার মতো বিষয়। 

কেননা, যিনি চাকরিজীবনে মোট বেতন পেয়েছেন ১৭ লাখ টাকা, তার স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এত টাকা জমা হওয়ার গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ থাকতে পারে না। উপরন্তু, যা তিনি আয়কর নথিতে দেখাননি। 

সূত্র বলছে, সম্পদের তথ্য গোপন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে শিগগির আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে দুদক মামলা করবে। তবে পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, আবজাল সপরিবারে বিদেশে অবস্থান করতে পারলে তার টিকিটি স্পর্শ করা কঠিন হবে। মামলাটি শুধু আইনি পদক্ষেপের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে। 

সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে আবজাল দম্পতি অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন, এমন খবরে খোদ দুদকের কর্মকর্তারাই হতাশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, সম্পদ অনুসন্ধানের শুরুতেই পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে ইমিগ্রেশনে তাদের পাসপোর্ট ব্লক করা হয়। এরপরও তারা কীভাবে দেশ ছাড়তে সক্ষম হলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

আবজাল দম্পতির সম্পদের অনুসন্ধান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদকের পরিচালক কাজী সফিকুল আলম যুগান্তরকে বলেন, সন্দেহজনক ও অপ্রদর্শিত উৎস থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করায় তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার বা মানি লন্ডারিং আইনেও মামলা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনুসন্ধান কর্মকর্তা মামলার অনুমতি চেয়ে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন। 

সূত্র জানায়, চলতি বছর মার্চে দুদকের পৃথক দুটি অনুসন্ধান টিম আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাই শুরু করে। অনুসন্ধানে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে প্রকৃত অর্থ-সম্পদের ব্যাপক গরমিল পাওয়া যায়। কোটি টাকার সম্পদের তথ্য বেমালুম চেয়ে যান আবজাল দম্পতি। 

আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানমের মালিকানাধীন রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও গোপন করা হয়। অনুসন্ধানে রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যাংক হিসাবে ২৬৩ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেনের তথ্য পায় দুদক। 

দুদকের এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বামীর অবৈধ আয়কে বৈধ করার পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যাংক হিসাবসমূহে কখনও এসওডি, কখনও মেয়াদি হিসাব আবার কখনও সঞ্চয়ী হিসাব অথবা পে-অর্ডার ইস্যু করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তিনি অপরাধ করেছেন। 

এ ছাড়া অজ্ঞাত উৎস থেকে ব্যাংক হিসাবে অপ্রদর্শিত ২৬৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৪ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা জমাকরণ এবং পরে উত্তোলন করে পাচারে জড়িত ছিলেন রুবিনা খানম। 

দুদক সূত্র জানায়, আবজাল হোসেন তার সম্পদ বিবরণীতে ৬০ লাখ ৭ হাজার ৭২৫ টাকার ঘোষণা দেন। কিন্তু যাচাইকালে দেখা যায়, তিনি ১ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার ২১৫ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন। দুদক তার ২ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার ৯৪০ টাকার সম্পদের খোঁজ পায়। 

এ ছাড়া আবজালের মালিকানায় থাকা ১ কোটি ২৪ লাখ ২২ হাজার ২৯৭ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্যও পাওয়া যায়। দুদকের অনুসন্ধান টিম দেখতে পায় কয়েকটি ব্যাংক হিসাব থেকে বিভিন্ন সময় ক্লিয়ারিং ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের অর্থ অন্যত্র সরিয়ে নেন আবজাল হোসেন। 

স্থানান্তর করা অর্থের পরিমাণ ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার ৩২ টাকা। এসব অর্থ তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কারণ তিনি তার চাকরিজীবনে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সর্বমোট বেতন পান ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ৩১২ টাকা। তিনি সব মিলিয়ে বেতন পেতেন ৩০ হাজার টাকা। অথচ চড়তেন হ্যারিয়ার ব্র্যান্ডের জিপে। 

ঢাকার উত্তরায় তার ও স্ত্রীর নামে বাড়ি আছে পাঁচটি। বাড়ি আছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতেও। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছে অন্তত ২৪টি প্লট ও ফ্ল্যাট। দেশে-বিদেশে আছে বাড়ি-মার্কেটসহ অনেক সম্পদ। 

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন সর�

No comments

close