অযথা রাস্তায় বের হলেই পিটুনি, মাস্ক পরতে বলছেন সেনারা
অযথা রাস্তায় বের হলেই পিটুনি, মাস্ক পরতে বলছেন সেনারা |
বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পরা ঘাতকব্যধি করোনাভাইরাস সামলাতে আজ বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বন্দরনগরের বিভিন্ন প্রধান সড়কে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ দল।
সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ১৭টি টিম কাজ করছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম জেলাসহ তিন পার্বত্য জেলায় মোট ৪৩টি টিম এখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মাঠে আছে। চট্টগ্রামে অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা প্রশাসনের ৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট। আছেন স্ব-স্ব থানার ওসিরাও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকালে অভিযানের শুরুতে সকালে খুলশীর ২ নম্বর সড়কে ১২/২ নম্বর ভবনে দক্ষিণ কোরিয়ানদের একটি রেস্টুরেন্ট সিলগালা করে দেয় যৌথবাহিনী। এসময় ওই রেস্টুরেন্টে কর্মরত দু'জন কোরিয়ান ও তিনজন বাংলাদেশিকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
পরে নগরের নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে দেয় সেনাবাহিনী। এসময় গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে করোনাভাইরাস নির্মূল করতে সচেতনতামূলক মাইকিং করে প্রচারণা চালায় সেনাবাহিনী।
মাইকিংয়ে সেনাবাহীনির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, 'করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করুন, দোকানপাট বন্ধ রাখুন, বাসায় অবস্থান করুন, অযথা রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করবেন না।।'
দুপুর ১২টার দিকে নগরীর জামালখান এলাকায় দেখা যায় সামনে ম্যাজিস্ট্রেট, পেছনে সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ির সঙ্গে আছে সিএমপির পুলিশ দল। এ সময় হ্যান্ড মাইকে নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন। হ্যান্ড মাইকে নগরবাসীকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের না হবার আহ্বান জানানো হয়। পরে দলটি নগরের সিআরবি এলাকায়ও অভিযান পরিচালনা করে।
বিকেল ৪ টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পূর্ব গেটে সেনা কর্মকর্তারা একটি রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেন। এসময় আশপাশে থাকা বাকি খাবারের দোকান গুলোকে সতর্ক করা হয়। এছাড়া নির্মাণাধীন কয়েকটি ভবনের কাজ বন্ধ করে শ্রমিকদের বাসায় পাঠিয়েছে সেনাবাহিনী।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, 'জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ দল নগরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে। এসময় সেনা সদস্যরা সড়কে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হলে তাকে বাসায় ফেরত পাঠাচ্ছে। এছাড়া হোম কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা পর্যালোচনাসহ প্রশাসনকে সহায়তা করছেন তারা। সেনা সদস্যদের নিয়ে আমরা (ম্যাজিস্ট্রেটরা) যারা কোয়ারেন্টাইনে আছেন তাদের এলাকায় যাচ্ছি।'
গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীসহ সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়।
সেনাসদস্যরা সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করবে। প্রাথমিকভাবে তারা বিদেশফেরত যারা হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলছে না, তাদের তদারক করবে। মূলত তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার পাশাপাশি ৫-৭ জনের বেশি লোক যাতে জড়ো না হয় এবং জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজন যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলাফেরা করে-সেটা নিশ্চিত করবে সেনাবাহিনী।
No comments