সবজির দাম পাচ্ছে না যশোরের কৃষক - Jashore24.com

শিরোনাম

সবজির দাম পাচ্ছে না যশোরের কৃষক



সবজির ভাণ্ডারখ্যাত দেশের সর্ববৃহৎ সবজি মোকাম যশোরের সাতমাইলে দাম সঙ্কটে ভুগছেন কৃষক ও ব্যাপারীরা।

সাতমাইল বাজারের সবজির হাট থেকে কাঁচা সবজি যায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের একাধিক স্থানে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি ও গণপরিবহন বন্ধের কারণে জনসমাগম কম থাকার প্রভাব পড়েছে হাটে। ফলে সবজির উৎপাদন ভালো হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষীরা।

বৃহস্পতিবার ছিল সবজির বড় মোকাম সাতমাইল বাজারের সাপ্তাহিক হাট। হাটে ছিল প্রচুর সবজি। গত হাটের চেয়ে এ হাটে সবজির আমদানি বেশি ছিল, তবে দাম নিয়ে অসন্তোষ ছিল কৃষকের। তারা বলছেন, সব সবজিই কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর যে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে করে লোকসানের শিকার হবেন কৃষক।

বুধবার হাটে বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি পটল ২৮ থেকে ২৫ টাকা, মূলা ১৮ টাকা, উচ্ছে ৩০ টাকা, বেগুন ৮ টাকা, ঢেড়স ১০ টাকা, সিম ১৫ টাকা, লাউ প্রতিটি ১০ থেকে ১২ টাকা ও বাধা কপি প্রতিটি ৬ টাকা।

যশোর সদর উপজেলার নাটুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, এবার ১৪ কাঠা জমিতে পটলের আবাদ করেছিলাম। বুধবার হাটে পটল বিক্রি করেছি ২৮ টাকা কেজিতে। অথচ এসময় সাধারণত পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। এর কম হলে চাষের খরচ ওঠে না।

চূড়ামনকাটি ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের আহাদ আলী জানান, ১৮ টাকা কেজি দরে মূলা বিক্রি করেছেন। কিন্তু এ সময়ে ৩০ টাকার কমে বিক্রি করলে উৎপাদন খরচ ওঠানো কঠিন।

বড় হৈবতপুর গ্রামের শুকুর আলী বলেন, বাধা কপি বেচতে হলো প্রতিটি ৬ টাকায়। এতে সার ও তেলের (কীটনাশক) খরচই উঠবে না।

অন্যদিকে ব্যাপারীরা বলছেন, তারা এ হাট থেকে সবজি কিনে ঢাকাসহ বাইরের জেলাগুলোতে নিয়ে দাম পাচ্ছেন না। খুচরা বাজারে ক্রেতা সঙ্কট দেখিয়ে কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে সবজির দাম।

ব্যাপারী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আনোয়ার হোসেন জানান, গত রোববার হাটে পরিবহন খরচসহ পটল ৩২ টাকা কেজিতে কিনে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হয়েছিল। বড় পাইকাররা দাম দিচ্ছে না।

স্থানীয় ব্যাপারী আবদুর রহমান বলেন, আগে ঢাকায় যেতে ট্রাকভাড়া লাগত ১৩-১৪ হাজার টাকা কিন্তু এখন ভাড়া নিচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। এতে মালের দাম বেশি পড়লেও আমরা ঢাকায় সবজি নিয়ে দাম পাচ্ছি না।

যশোরের চুড়ামনকাটি এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সবজির উৎপাদন প্রচুর। কিন্তু ক্রেতা সঙ্কটে দাম পাচ্ছেন না কৃষক। করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে বাজারে ক্রেতা সঙ্কট। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন।

যশোর আঞ্চলিক কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বলেন, যশোরে সারাবছর সবজির আবাদ হয়ে থাকে। এ জেলায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে বছরে ৮ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি সবজি উৎপাদন হয়। এরমধ্যে চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে বেগুন, পটল, লাউ, সিমসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ হয়েছে। সম্প্রতি কৃষি বিভাগ সবজি উৎপাদনে যশোরকে প্রথম ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন করোনা ভাইরাসের কারণে সবজির দাম কম পাচ্ছেন চাষিরা।


 উৎস : সমকাল

No comments

close