যশোরে হাজতির হ্যান্ডকাপসহ গ্রিল ভেঙে পালানোর ঘটনায় ১৩ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসুলেশন ওয়ার্ডের জানালার গ্রিল ভেঙ্গে হ্যান্ডক্যাপ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া হাজতি সুজন ওরফে শাকিলের (২৫) সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ। গত ১২ এপ্রিল রাতে সুজন হাসপাতালের ওয়ার্ডের জানালার গ্রিল ভেঙ্গে পালিয়ে যায়।
সুজন রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর কাজীপাড়া মল্লিক বাড়ির রনজিত মল্লিকের ছেলে। তিনি যশোর শহরের মোল্লাবারান্দিপাড়া আমতলা হাসান মহুরির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। কোতয়ালি থানার নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনার পর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইজ প্রিজন ছগির মিয়া সুপার সুব্রত কুমার বালা, জেলর তুহিন কান্তি খাঁন ও কোতয়ালি থানার পরিদর্শক তাসমিম শেখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হাজতি পালানোর ঘটনায় জেলর তুহিন কান্তি খান বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছে।
এদিকে এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে ১৩জনের বিরুদ্ধে। জেল কোড অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন, জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলর তুহিন কান্তি খাঁন জানান, '১০ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার হাজতি সুজন তাকে জানায় তার শরীরে জ¦র অনুভূত হচ্ছে। সে অসুস্থ বোধ করছিলো। তার বোন করোনায় আক্রান্ত। তারও করোনা হতে পারে। এরপর তাকে ওই দিন সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিটে কেন্দ্রীয় কারগার থেকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসুলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার হাতে হ্যান্ডক্যাপ লাগানো ছিলো। ওয়ার্ডের সামনে ৪ জন করারক্ষী ও দুজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করছিলো। এরই মধ্যে রোববার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সুজন হাসপাতালের ওয়ার্ডের জানালার গ্রিল ভেঙ্গে হ্যান্ডক্যাপসহ পালিয়ে যায়। তার পালিয়ে যাওয়ার সংবাদ পাওয়ার পরপরই পুলিশ ওয়ারলেস ম্যােিসজ পাঠায় জেলা ব্যাপী। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার গায়ে একটি লাল রং এর গেঞ্জি ছিল।
ওয়ার্ডের অন্য রোগীরা জানান, সুজন পালানোর আগে ওয়ার্ডের জানালার সামনে দুজন লোকের সাথে কথা বলছিলো। এর কিছু সময় পর সুজন পালিয়ে যায়। সুজনকে পালিয়ে যেতে দেখে হাসপাতালের দুজন স্টাফ চিৎকার দেয়ার পর ওয়ার্ডের সামনে কর্তব্যরত করারক্ষী ও পুলিশ খোঁজা খুজি শুরু করে।
যশোর কোতয়ালি থানার পরিদর্শক তাসমিম শেখ জানান, সুজন ওরফে শাকিলকে স্কুল ছাত্রী সানজিদা ইয়াসমিন চুমকি অপহরণ মামলায় ১০ এপ্রিল সকালে শহরের দড়াটানা থেকে আটক করা হয়। গত ৪ এপ্রিল সকালে বাড়ির দক্ষিণ পাশের ইটের সলিংয়ের রাস্তা থেকে সানজিদাকে ফুঁসলিয়ে অপহরণ করে মোটরসাইকেলে নিয়ে যায় সুজন। ওই সময় সানজিদা সবজি খেতে পানি দিতে যাচ্ছিল। এ ঘটনায় সানজিদার পিতা শহরের পুরাতন কসবা আজিজ সিটির বাসিন্দা জিয়াউর রহমান বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় নারী ওশিশু নির্যাতন দমন আইনে সুজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা নং ২৪।
মামলার তদন্ত কর্মকার্তা পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সুকুমার কুন্ডু জানান, ১০ এপ্রিল সকালে সুজনকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় শহরের দড়াটানা থেকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এর আগে সুজন মনিরামপুরে বিয়ে করে। ওই স্ত্রীকে তিনি ডিভোর্স দেন। সেখানে তার একটি ৪ বছরের সন্তান রয়েছে। হাজতি সুজনকে আটক করা যায়নি।
সূএ: ডেলি স্পন্দন
No comments