ঘুর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড যশোর
ঘুর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড যশোর |
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে যশোর। গাছ উপড়ে ঘরের উপর পড়ায় মারা গেছে দুই নারী। এছাড়া গাছ উপড়ে ও ডাল ভেঙে সড়কে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করতে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে ফসলেরও কিছু ক্ষতি হয়েছে, তবে সে ক্ষতির পরিমানণএখনও নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান বুধবার (২০ মে) রাত ১০টার দিকে যশোরে আঘাত হানে। এসময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার। ঝড়ের তাণ্ডবে ওই রাতেই চৌগাছা উপজেলার চানপুর গ্রামে একটি ঘরের উপর গাছ পড়ে খ্যান্ত বেগম ও তার মেয়ে রাবেয়া নিহত হন।
এছাড়া প্রবল এ ঝড় যশোর অতিক্রম করার সময় গাছ-পালা ভেঙে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায়। সকাল হতেই যার চিহ্ন মেলে। যশোরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় গাছ ভেঙে ও উপড়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্মরণকালে তারা এমন ভয়াবহ ঝড় দেখেননি। এদিকে গাছ উপড়ে ও ডাল ভেঙে সড়কে পড়ায় যশোরের সাথে খুলনা ও সাতক্ষীরার যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
সালাম হোসেন নামে একজন বলেন, ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষেত দেখতে সকালে বের হয়েছি। যা দেখলাম শুধু গাছ পড়েছে। কিছু জায়গায় গাছ পড়ায় প্রাচীর ভেঙে গেছে। এছাড়া আলগা টিনের ছাউনি উড়ে গিয়েছে। রাতে ঝড়ের যে গতি ছিল তাতে ভয় পেয়েছিলাম।
সাগর দাস নামে একজন জানান, অনেক ঝড় দেখেছি। কিন্তু গতরাতের ঝড় ছিল অনেক দীর্ঘস্থায়ী। বাতাসের শব্দে আতংকে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাড়ির পাশের ছোট বড় অনেক গাছ ভেঙে গেছে। বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে গেছে।
আজিম হোসেন নামে এক গাড়ি চালক জানান, সকালে সাতক্ষীরার জন্য একটি ভাড়া পাই। কিন্তু বড় গাছ উপড়ে পড়ায় যশোর - বেনাপোল সড়ক এবং আশপাশের বিকল্প সকল পথ বন্ধ ছিল। কোনোভাবেই এগুলো সম্ভব হয়নি। ফলে আবারো ফিরে আসতে হয়েছে। যে অবস্থা তাতে সড়ক পরিস্কার হতেও দুই তিনদিন সময় লাগবে।
যশোর ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার হাফিজুর রহমান জানান, গতরাত থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে গাছ পড়ার খবর পেয়েছি। যে কারণে খুব ভোর থেকে দুটি টিমে বিভক্ত হয়ে কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে অনেক সড়কের গাছ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকী গাছগুলোও দ্রুত সরিয়ে নেয়া হবে। এছাড়া উপজেলাগুলোতেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফ জানিয়েছেন, আম্পানের কারণে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করতে ফায়ারসার্ভিস কাজ শুরু করেছে। দ্রুতই সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী হবে।
এদিকে ফসলেরও কিছু ক্ষতি হয়েছে, তবে সে ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আক্তারুজ্জামান।
তিনি বলেন, যশোরে ১১শ' হেক্টর পানের বরজ, ৪ হাজার ৭শ' হেক্টর আম ও লিচু এবং সবজি রয়েছে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। এসব ক্ষেত খামারে কিছু ক্ষতি হবে। সেটা নিরুপণের চেষ্টা চলছে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় একটু বিলম্ব হচ্ছে।
সূত্র: সময় নিউজ
No comments