যশোরের কেশবপুরে প্রতারক চক্র গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও - Jashore24.com

শিরোনাম

যশোরের কেশবপুরে প্রতারক চক্র গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও

কেশবপুরে জাকস ফাউন্ডেশন নামের একটি ভুয়া এনজিও গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোটা অংকের লোন দেবার কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে এককালিন টাকা নিয়ে লোন দেওয়ার আগমূহুর্তে তারা অফিস ফেলে পালিয়ে গেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার উপক্রম হয়েছে। তারা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতারকের সন্ধ্যান পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে প্রতারনার শিকার কেশবপুর সদরের হাবাসপোল গ্রামের রেজাউল ইসলাম অজ্ঞাত ৬ জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।

কেশবপুরে প্রতারক চক্র গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও

অভিযোগে জানা যায়, সম্প্রতি কেশবপুর সদরের ভোগতি নরেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন সরদারের ছেলে মোঃ আব্দুল জলিলের বাড়ির ৪টি রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে জাকস নামের এনজিও অফিস চালু করে। এরপর অফিসের নামে একটি সাইন বোর্ডও টাঙানো হয় সেখানে। তাতে লেখা “জাকস ফাউন্ডেশন“ এম আর এ সনদ নম্বর- ০১৪২০-০১২২১-০০২৩১, শাখা অফিস ভোগতি, কেশবপুর, যশোর। 

জাকস ফাউন্ডেশনের কথিত কর্মকর্তারা প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে গ্রাহকদের স্বামী-সন্তান ও তাদের নিকট আত্মীয়দের বিদেশে পাঠানোর কথা বলে প্রতি গ্রাহককের নিকট থেকে সঞ্চয় বাবদ ২৫ হাজার ২শ’ থেকে ৩০ হাজার ২শ’ টাকা করে জমা নিয়ে ২ লাখ ৫০ থেকে ৩ লাখ টাকা লোন দেয়া হবে বলে লোভ দেখিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৪শ‘ গরীব পরিবারের সদস্যদের নিকট থেকে প্রায় কোটি টাকা উত্তোলন করে। পরে রাতের আঁধারে তারা অফিস ফেলে গত ৬ ডিসেম্বর পালিয়ে গেছে।

 ২ জন মহিলা এবং একজন পুরুষ মিলে ৩ সদস্যের ওই প্রতারক চক্রটি মাত্র ১ মাসের মধ্যে তাদের এ মিশন শেষ করে গ্রাহকের টাকা নিয়ে অফিসে ৩টি চেয়ার ও ১টি টেবিল ফেলে  হাওয়া হয়ে গেছে। গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগের জন্য ০১৭৯৩৭১২০৩৯ নম্বর মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করেছিলেন পাপিয়া নামের অফিস বস। বর্তমানে মোবাইল নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসসহ বিভিন্ন অফিসে খোঁজ খবর নিয়ে ওই প্রতারক চক্রটির কোন সন্ধান না পেয়ে গ্রাহকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাদের ধারণা পাপিয়ার ব্যবহার করা ওই মোবাইল নম্বরের মালিককে বের করলে হয়তো এই চক্রটির সন্ধান মিলতে পারে। 

প্রতারনার শিকার উপজেলার ভাল্লুকঘর গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফতেমা, মোবারক মাঝির স্ত্রী ময়না, মনজুর মোড়লের স্ত্রী শিরিনা বেগম, শাহাকাত হোসেনের স্ত্রী তাছলিমা, জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী নার্গিস এবং লতিফ মোড়লের স্ত্রী আয়শা বেগম বলেন, আমারা অত্যন্ত গরীব আমাদের স্বামীরা কেউ মাঠে কামলা দেয় আবার কেউবা ভ্যান গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। ওই সমিতি আমাদের স্বজনদের বিদেশে পাঠাবার লোভ দেখিয়ে সঞ্চয় নিয়েছে। উন্নত জীবন-যাপনের আশায় স্বামী ও সন্তানদের বিদেশে পাঠাবার জন্য আমাদের সহায়সম্বল ছাগল গরু বিক্রি এবং সুদে টাকা ধার নিয়ে আমরা সকলে টাকা জাকসের সঞ্চয় বইতে জমা দিয়েছি। 

এরপর গত ৬ ডিসেম্বর অফিসে লোন নিতে যেয়ে দেখি তারা পালিয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলার হাবাসপোল গ্রামের রেজাউল ইসলাম ৭ ডিসেম্বর অজ্ঞাত ৬ জনকে আসামী করে কেশবপুর থানায় একটি অভিযোগও করেছেন। 

রেজাউল ইসলাম বলেন, আমি ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। জাকস ফাউন্ডেশন সমিতির প্রতারকরা আমার নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছে। অনেক খোঁজ খবর করেছি ওই নামে কোন সমিতির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেনা। এছাড়া ওরা যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতো তাও এখন বন্ধ।

এ ব্যাপারে ঘরমালিক আব্দুল জলিল জানান, আমি তাদের চিনি না। তারা আমার কাছ থেকে ঘর ভাড়া নিয়েছিল। তবে আমি তাদের কাছ থেকে কোন কাগজপত্র নেয়নি। যেটা আমার ভুল হয়েছে।

No comments

close